সাহসীকন্ঠ৭১ডটকম ডেস্কঃ মুহাম্মদ আতাউল গণি ওসমানী, যিনি জেনারেল এম. এ. জি. ওসমানী নামেই বেশি পরিচিত, বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় মুক্তিবাহিনীর প্রধান সেনাপতি ছিলেন। তাঁর সামরিক ও রাজনৈতিক জীবন উভয় ক্ষেত্রেই তিনি বেশ কিছু বিশেষ গুণের জন্য এশিয়া মহাদেশে সুনাম অর্জন করেছিলেন।
সামরিক জীবন
ওসমানী ছিলেন একজন অত্যন্ত দক্ষ এবং পেশাদার সামরিক কর্মকর্তা। তিনি ১৯৩৯ সালে ব্রিটিশ ভারতীয় সেনাবাহিনীতে যোগ দেন এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় বার্মায় যুদ্ধ করেন। অল্প বয়সেই তিনি ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের সর্বকনিষ্ঠ মেজর হিসেবে পদোন্নতি পেয়েছিলেন, যা তাঁর সামরিক প্রতিভার প্রমাণ। দেশভাগের পর পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে যোগ দিয়ে তিনি ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টকে একটি শক্তিশালী বাহিনী হিসেবে গড়ে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুনঃঃ-
www.sahoshikontho71.com
মুক্তিযুদ্ধের সময় তাঁর নেতৃত্ব ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রধান সেনাপতি হিসেবে তিনি সামরিক কৌশল নির্ধারণ, সমগ্র বাংলাদেশকে ১১টি সেক্টরে ভাগ করা এবং মুক্তিবাহিনীকে সুসংগঠিত করার কাজটি দক্ষতার সঙ্গে সম্পন্ন করেন। তাঁর এই দূরদর্শী নেতৃত্বই মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশের বিজয়কে ত্বরান্বিত করে।
ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিক জীবন
ব্যক্তিগত জীবনে ওসমানী ছিলেন একজন সৎ, স্পষ্টভাষী এবং নীতিবান মানুষ। তিনি আজীবন অবিবাহিত ছিলেন এবং তাঁর সততা ও চারিত্রিক দৃঢ়তার জন্য তিনি সবার কাছে সম্মানিত ছিলেন। রাজনীতিতে যোগদানের পর তিনি কখনো তাঁর আদর্শ থেকে সরে আসেননি। ১৯৭৫ সালে বাকশাল গঠনের বিরোধিতা করে তিনি সংসদ সদস্য পদ এবং আওয়ামী লীগের সদস্য পদ ত্যাগ করেন, যা তাঁর নীতির প্রতি অবিচল থাকার প্রমাণ।
তাঁর সম্মান ও খ্যাতির কারণে তিনি "বঙ্গবীর," "টাইগার ওসমানী," এবং "পাপা টাইগার" নামেও পরিচিত ছিলেন। তাঁর নামে সিলেট শহরে একটি মেডিকেল কলেজ, হাসপাতাল এবং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর স্থাপন করা হয়েছে। ঢাকায় তাঁর স্মৃতি রক্ষার্থে ওসমানী উদ্যান ও ওসমানী মেমোরিয়াল হল রয়েছে। এসব সম্মান ও স্বীকৃতি তাঁর অসাধারণ ব্যক্তিত্ব এবং দেশের প্রতি তাঁর অবদানের প্রতিফলন।