আঙিনায় ইংল্যান্ড ফিরিয়ে আনছে সেই সব স্মৃতি




২৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৩ ইং
sbit

বাংলাদেশ–ইংল্যান্ড ওয়ানডে বললে কোন ম্যাচটা প্রথমেই মনে পড়ে আপনার?

ধরুন, এটা একটা এমসিকিউ। সম্ভাব্য উত্তর হিসেবে দেওয়া আছে চারটি ভেন্যুর নাম—ব্রিস্টল, চট্টগ্রাম, অ্যাডিলেড, ঢাকা। কোনটিতে টিক দেবেন আপনি?

চারটি অপশন যে দৈবচয়ন ভিত্তিতে বেছে নেওয়া নয়, তা আপনার বুঝে ফেলার কথা। দুই দেশের মধ্যে ২১টি ওয়ানডে ম্যাচের যে ৪টিতে বাংলাদেশ জিতেছে, সেই ৪টি ম্যাচই না? হ্যাঁ, ওই চারটি ম্যাচই। ২০১০ সালে ব্রিস্টলে প্রথম জয়, ২০১৬ সালে ঢাকার মিরপুরে সর্বশেষ। মাঝখানের দুটি জয় ২০১১ ও ২০১৫ সালে পরপর দুটি বিশ্বকাপে।

‘প্রথম’–এর মাহাত্ম্যের কারণে ব্রিস্টল একটু আলাদা মর্যাদা দাবি করে। তবে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশের সেরা জয় বেছে নিতে গেলে লড়াইটা মনে হয় বিশ্বকাপের ম্যাচ দুটির মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে।

২০১১ বিশ্বকাপে চট্টগ্রামের জয়টা বাংলাদেশের ওয়ানডে ইতিহাসের সেরা জয়ের তালিকার ওপরের দিকেই থাকবে। ১৬৯ রানে ৮ উইকেট হারিয়ে ফেলার পর কেউ বাংলাদেশের জয়ের আশা করেছিলেন বলে দাবি করলে জবাব দেওয়ার দরকার নেই। নিশ্চিত থাকতে পারেন, তিনি সত্যি বলছেন না। নবম উইকেটে মাহমুদউল্লাহ ও শফিউলের অপরাজিত ৫৮ রানের জুটিতে যা লেখা হয়েছিল, তা আসলে ক্রিকেটীয় রূপকথা।

তারপরও ২০১৫ বিশ্বকাপে অ্যাডিলেডের জয়কে একটু এগিয়ে রাখতে চাই। সেই জয় বাংলাদেশকে কোয়ার্টার ফাইনালে তুলে দিয়েছিল, এটা একটা কারণ। তবে সবচেয়ে বড় কারণ অবশ্যই নয়। অ্যাডিলেড আলাদা হয়ে আছে বাংলাদেশের কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠার চেয়েও বৃহত্তর তাৎপর্যের কারণে। বাংলাদেশের কাছে ওই পরাজয় ছিল ইংলিশ ক্রিকেটের রিখটার স্কেলে ৯ মাত্রার ভূমিকম্প, যা বদলে দিয়েছিল ইংল্যান্ডের ওয়ানডে–সংস্কৃতিই।

যেটির সুদূরপ্রসারী প্রভাব শুধু ইংল্যান্ড দলেই সীমাবদ্ধ থাকেনি, বদলে দিয়েছে ওয়ানডে ক্রিকেটকেই। নির্দিষ্ট একটা ম্যাচের এমন যুগান্তকারী হয়ে ওঠার ঘটনা ক্রিকেট ইতিহাসেই খুব বেশি নেই।

চার বছর পর লর্ডসের ফাইনালে তর্কযোগ্যভাবে সর্বকালের সেরা ওয়ানডে জিতে ইংল্যান্ডের বিশ্বকাপ জয়ের বীজও বোনা হয়েছিল সেদিনই। রক্ষণশীলতার খোলস ঝেড়ে ফেলে সাদা বলে ইংল্যান্ডের প্রলয়ংকরী হয়ে ওঠার সূচনা তো ওই অ্যাডিলেড–বিপর্যয়ের পরই। যেটির প্রভাবক হিসেবে হয়তো বাংলাদেশকেও ধন্যবাদ দেয় ইংল্যান্ড।