বার ভূইয়া এক ভূইয়া জামে মসজিদের ইতিহাস


সাহসীকন্ঠ৭১ডট কম

০৪ অগাস্ট ২০২৫ ইং
নিস্ব প্রতিবেদকঃ

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ নোয়াখালী জেলার (বর্তমানে ফেনী জেলার ছাগলনাইয়া উপজেলা) চাঁদগাজী মহামায় ইউনিয়নের মাটিয়াগোদা গ্রামের জামে মসজিদের ১১২২ হিজরিতে স্থাপন এবং এর নির্মাতা সম্পর্কে, তথ্যের উপর ভিত্তি করে কিছু প্রাসঙ্গিক তথ্য খুঁজে বের করেছি।

১১২২ হিজরী কত সাল এবং কত বছরের পুরোনো?
তথ্য অনুযায়ী, ১১২২ হিজরি সালটি গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডারে ১৭১০-১৭১১ খ্রিস্টাব্দের সমতুল্য। বর্তমান সময় থেকে এই মসজিদটির স্থাপনকাল গণনা করলে, এর বয়স প্রায় ৩১৫ বছর।
ইসলামিক বা হিজরি বছর গ্রেগরিয়ান বছরের চেয়ে প্রায় ১১ দিন কম হয়, কারণ এটি চান্দ্র মাস দ্বারা নির্ধারিত। এ কারণে, প্রতি বছর গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডারে হিজরি সাল পিছিয়ে যায়। একটি সহজ হিসাব অনুযায়ী, হিজরি সালকে গ্রেগরিয়ান সালে রূপান্তর করতে, হিজরি সালকে ০.৯৭ দিয়ে গুণ করে তাতে ৬২২ যোগ করা হয়।
(১১২২ \times ০.৯৭) + ৬২২ = ১০৮৮.৩৪ + ৬২২ = ১৭১০.৩৪
এই গণনার ভিত্তিতে, ১৭১০ খ্রিস্টাব্দে মসজিদটি স্থাপিত হয়েছিল বলা যায়।
তৎকালীন মুসলিম জনসংখ্যা
১৭-১৮ শতকে বাংলার মুসলিম জনসংখ্যা কেমন ছিল, তা নিয়ে সঠিক পরিসংখ্যান খুঁজে পাওয়া কঠিন। কারণ সেই সময় জনসংখ্যা গণনা বা আদমশুমারির কোনো আধুনিক ব্যবস্থা ছিল না।
তবে, বিভিন্ন ঐতিহাসিক সূত্র থেকে জানা যায়, মুঘল আমলে সুবাহ বাংলা ছিল বিশাল ও সমৃদ্ধ একটি প্রদেশ। এই সময়ে ইসলামের ব্যাপক প্রসার ঘটে। সুবাহ বাংলার রাজধানী মুর্শিদাবাদে অনেক সুফি দরবেশ, ধর্মপ্রচারক এবং মুসলিম পণ্ডিতদের আগমন ঘটে। এছাড়া, এই অঞ্চলে নবাবদের পৃষ্ঠপোষকতায় শিক্ষা, সংস্কৃতি ও স্থাপত্যের বিকাশ ঘটে।
অনেক গবেষকের মতে, ১৭শ শতাব্দীর শেষ এবং ১৮শ শতাব্দীর শুরুর দিকে বাংলার নদী তীরবর্তী অঞ্চলগুলোতে মুসলিম জনসংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছিল। এই সময়ে বিভিন্ন মুসলিম শাসক ও ভূঁইয়াদের অধীনে স্থানীয় মুসলিম সমাজ ও সংস্কৃতি গড়ে ওঠে। ফেনীর ছাগলনাইয়া অঞ্চলের মতো জায়গায় যেখানে চাঁদগাজী ভূঁইয়ার মতো স্থানীয় মুসলিম শাসকের অস্তিত্ব ছিল, সেখানে মুসলিম জনসংখ্যা স্বাভাবিকভাবেই একটি শক্তিশালী অবস্থানে ছিল বলে ধারণা করা যায়।