নিজস্ব প্রতিবেদকঃ আমন ধানে ভালো ফলন এবং পুষ্টিকর খাদ্য পেতে হলে সুষম সার ব্যবহার করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। শুধুমাত্র ইউরিয়া সার ব্যবহার করলে ভালো ফলন পাওয়া যায় না, বরং এতে মাটির উর্বরতা নষ্ট হয় এবং ফসলে রোগবালাইয়ের আক্রমণ বাড়ে।
আমন ধানের জন্য প্রয়োজনীয় সারগুলো হলো:
* ইউরিয়া (নাইট্রোজেন): ধান গাছের বৃদ্ধি, সবুজ পাতা এবং ফলন বাড়াতে এটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। তবে অতিরিক্ত ইউরিয়া দিলে গাছ নরম হয়ে যায় এবং রোগবালাইয়ের আক্রমণ বাড়ে।
* টিএসপি বা ডিএপি (ফসফরাস): এটি গাছের শিকড় গঠনে সাহায্য করে এবং কুশি বাড়ে।
* এমওপি (পটাশিয়াম): ধান গাছের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, ফলন ভালো করে এবং ধানের দানা পুষ্ট হতে সাহায্য করে।
* জিপসাম (সালফার) ও জিংক সালফেট (জিংক): এই দুটি সারও গাছের স্বাভাবিক বৃদ্ধির জন্য জরুরি। সালফার গাছের পাতা সবুজ রাখে এবং জিংক গাছের পুষ্টি উপাদানের ভারসাম্য বজায় রাখে।
সারের পরিমাণ ও প্রয়োগ পদ্ধতি
সাধারণত, আমন ধানে প্রতি বিঘা (৩৩ শতক) জমিতে নিম্নোক্ত পরিমাণে সার ব্যবহার করা হয়:
* ইউরিয়া: ২১-২৬ কেজি
* টিএসপি/ডিএপি: ৭-১০ কেজি
* এমওপি: ৩.৫-১৩.৫ কেজি
* জিপসাম: ৪-১১ কেজি
* জিংক সালফেট: ১-২ কেজি
* জৈবসার (গোবর): ৩৫ মণ
প্রয়োগের নিয়ম:
* জমি তৈরির সময়: জমি তৈরির শেষ চাষের সময় টিএসপি/ডিএপি, জিপসাম, জিংক সালফেট এবং এমওপি সারের দুই-তৃতীয়াংশ ছিটিয়ে দিন।
* চারা রোপণের পর: ইউরিয়া সারকে ৩টি কিস্তিতে প্রয়োগ করা উচিত।
* ১ম কিস্তি: চারা রোপণের ১০-১৫ দিন পর।
* ২য় কিস্তি: চারা রোপণের ২৫-৩০ দিন পর।
* ৩য় কিস্তি: কাইচ থোড় আসার ৫-৭ দিন আগে।
যদি আপনি ডিএপি সার ব্যবহার করেন, তবে প্রতি কেজি ডিএপি সারের জন্য ৪০০ গ্রাম ইউরিয়া কম ব্যবহার করতে পারেন, কারণ ডিএপি সারেও নাইট্রোজেন থাকে।
মনে রাখবেন, মাটির ধরণ, ধানের জাত এবং আবহাওয়ার ওপর সারের পরিমাণ কিছুটা নির্ভর করে। তাই স্থানীয় কৃষি কর্মকর্তার সাথে পরামর্শ করে সারের পরিমাণ নির্ধারণ করা সবচেয়ে ভালো।